মুসলিম নারী ও পুরুষের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে সমতার অধিকার

13/02/2013 23:24

ইবাদত হলো আল্লাহ কতৃক আদিষ্ট বিষয়সমূহ সম্পাদন এবং তাঁর নিষিদ্ধ বিষয়াবলী থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। সালাত, সাওম, যাকাত, হজ্জ, সত্য কথা, আমানতদারী, প্রতিবেশীর হক আদায়, মাতা-পিতার সাথে ভালো ব্যবহার, ওয়াদা পালন, সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধসহ সকল আমলে সালেহ ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। শুধু ইবাদত করার উদ্দেশ্যেই আল্লাহ এই বিশ্বজগৎ সৃষ্টি করেছেন। যেমন, কুরআনে বলা হয়েছে: “আমি জিন ও মানবজাতিকে একমাত্র আমার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি” (সূরা আয যারিয়াত: ৫৬)।

যত রাসূল দুনিয়ায় আগমন করেছেন এ উদ্দেশ্যকে স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্যই আগমন করেছেন। যেহেতু আল্লাহর দাসত্ব করাই মানব সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য, তাই এ উদ্দেশ্য পূরণ করাই আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিল করার উপায়। একজন মানুষের মর্যাদার উচ্চ শিখরে পৌঁছার অর্থই হলো, তিনি তার কর্ম দ্বারা ইবাদতের উচ্চস্তরে পৌঁছেছেন। তাই একজন মুসলিম-এর জন্য তার ইবাদতের তাৎপর্য ও গুরুত্ব সম্পর্কে জ্ঞান থাকা অত্যন্ত জরুরী। মানব জাতিকে হিদায়াত দানের মাধ্যমে পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহ তায়ালা ইসলামকে মানুষের জন্য জীবন বিধান স্বরূপ  নাযিল করেছেন। মানুষকে দুনিয়াতে আল্লাহর নির্দেশিত পথে চলতে হয় এবং তাঁর আদেশ নিষেধ মেনে চলার মাধ্যমে চিরস্থায়ী সুখের স্থান জান্নাত লাভের চেষ্টা করতে হয়। আর এটিই মানুষের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। একজন প্রকৃত মুমিন ব্যক্তি সেই যে নামায কায়েম করে, রমযানে রোযা রাখে,  তার মালের যাকাত আদায় করে এবং সামর্থ্য হলে মক্কায় হজ্জ্ব পালন করে। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বহু আয়াতে এবং রাসূলুল্লাহ (স.) বহু হাদিসে একথা উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ আল্লাহর ইবাদত যথাযথ ও সঠিক নিয়মে পালন করা জরুরী। রাসূলুল্লাহ্ (স.) নামায, রোযা, হজ্জ্ব,  যাকাত এই ইবাদতগুলো কিভাবে পালন করতে হবে তা তাঁর জীবদ্দশায় উম্মতগণকে শিক্ষা দিয়েছেন। তাঁর ওফাতের পর তাঁর সাহাবীগন, তাবেয়ী, তাঁবে-তাবেয়ীদের মাধ্যমে আমাদের নিকট পৌঁছেছে। দুইশত শতাব্দীর দিকে ইসলামের প্রসিদ্ধ চার ইমাম মুসলিমগণের  ইবাদতের সঠিক পদ্ধতির জন্য রাসূলুল্লাহ (স.) এর হাদিস, তাঁর ইবাদতের পদ্ধতি ও সাহাবীগনের ইবাদতের পদ্ধতি বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা করে তা নিরূপণের চেষ্টা করেছেন এবং তারা নারী ও পুরুষের ইবাদতের গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা ও তাৎপর্য সম্পর্কে সাধারণ মুসলিম সমাজকে অবহিত করার ব্যাপারে সচেষ্ট ছিলেন। মানবজাতিকে যেহেতু সৃষ্টিই করা হয়েছে আল্লাহর ইবাদতের জন্য, তাই আল্লাহর এই আদেশ অমান্যকারীদের জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে এবং সকল মুসলিমকেই এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। আর এর জন্য থাকতে হবে এ সম্পর্কিত বিস্তারিত জ্ঞান। এসকল দিক বিবেচনা করে  উক্ত বিষয়ের উপর উচ্চতর গবেষণা একান্ত প্রয়োজন বিধায় এ শিরোনামে গবেষণা করার পরিকল্পনা করি। আমার জানামতে পূর্বে এ বিষয়ে কোনরূপ উচ্চতর গবেষণা পরিচালিত হয়নি।  আলোচ্য গবেষণাটি  নারী-পুরুষের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে সমতার অধিকারের ক্ষেত্রে এক নবতর দিক উন্মোচনের ক্ষুদ্র প্রয়াস হিসেবে পরিগণনের উদ্দেশে নিবেদিত।

Download Full